সিরিয়ায় ধর্ম

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

সিরিয়ায় ধর্ম (শু. ২০২১)[১]

  দ্রুজ (৩%)

সিরিয়ায় ধর্ম (শু. ২০১৭)[২]

  আলবীয় (১০.২%)
  ধর্মহীন (৯.৮%)
  দ্রুজ (১.২%)
  অন্যান্য (২.৩%)
দামেস্কে অবস্থিত উমাইয়া মসজিদ। সিরিয়ার প্রধান ধর্ম সুন্নি ইসলাম
আলেপ্পোর শাহী মসজিদ। ইসলামপূর্ব সেলজুক ও মামলুক স্থাপত্যের আদলে তৈরি।

সিরিয়ায় ধর্ম বলতে সিরিয়ার নাগরিকদের কত শতাংশ কোন ধর্মাবলম্বীদের বা সিরিয়ায় কোন কোন ধর্ম পালন করে তা বোঝায়। ঐতিহাসিকভাবে, অঞ্চলটিতে নানান ধর্মের সম্প্রসারণ ঘটেছে। এমনকি একই ধর্মের নানান মতবাদ প্রচলিত আছে। সিরিয়ার প্রধান ধর্ম হল ইসলাম। ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে সুন্নিদের সংখ্যাই সবচেয়ে বেশি। এরপরেই আছে শিয়া[৩] উল্লেখ্য, সিরিয়ায় খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের বসবাস করে।[৪][৫][৬] আবার অল্পসংখ্যক ইহুদি সম্প্রদায়ও বসবাস করে।

ইসলাম[সম্পাদনা]

সুন্নি[সম্পাদনা]

আল-অত্রুস মসজিদ ১৪শ শতকে তৈরি একটি মামলুক মসজিদ

সিরিয়ার সবেচেয়ে বেশি মানুষ সুন্নি ধর্মালম্বী,[৭][৮] যা মোট জনসংখ্যার ৭৬.৯ শতাংশ। যাদের মধ্যে আরবি কথা বলা সুন্নি সম্প্রদায়ের সংখ্যা বেশি। এরপরেই, যথাক্রমে কুর্দি সম্প্রদায়, তুর্কমান/তুর্কমেন, সারকাসিয়ান এবং ফিলিস্তিনদের অবস্থান। শুধুমাত্র শুয়ায়দা শহর ও শুয়ায়দা প্রদেশ ছাড়া, সিরিয়ার ১৪টি প্রদেশের মধ্যে ১৩টিতেই সুন্নি ধর্মালম্বী মানুষের সংখ্যাই বেশি।[৯]

শিয়া[সম্পাদনা]

সৈয়দা যায়নাব মসজিদ এ রয়েছে যায়নাব বিনতে আলির কবর, এটি শিয়া মুসলিমদের পবিত্রস্থান
সৈয়দা রুকাইয়া মসজিদ ১৯৮৫ সালে তৈরি হয়েছে যা ইরানিয়ান স্থাপত্যের আদলে তৈরি

সুন্নি ছাড়া যেসকল মানুষ সিরিয়ায় ইসলাম ধর্মালম্বী, তাদের অনুপাত মোট জনসংখ্যার ১৬ শতাংশ এবং এদের মধ্যে বেশিরভাগই আলাউয়িইসমাইলি সম্প্রদায়।[৪] শিয়া মুসলিমদের মধ্যেও ভিন্ন ভিন্ন সম্প্রদায় রয়েছে।

আলেভি[সম্পাদনা]

সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে কিছু কুর্দি ও তুর্কমেন সম্প্রদায়ের আলেভিরা বসবাস করে। আফরিন প্রদেশের মাবাতলি শহরে সবচেয়ে বেশি কুর্দি সম্প্রদায়ের আলেভিরা বসবাস করে।[১০] ২০১৪ সালে, কুর্দি নিয়ন্ত্রিত আফরিন প্রদেশে আলেভি সম্প্রদায়ের হেভি ইবরাহিম প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। আলেপ্পোতে প্রায় কয়েক হাজার তুর্কমেন আলেভিরা বসবাস করে। তাদের বেশিরভাগই তুরস্কতে পালিয়ে গেছে।[১১]

দ্রুজ[সম্পাদনা]

সিরিয়ার ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে দ্রুজদের সংখ্যা ৩য় সর্বোচ্চ যা মোট জনসংখ্যার ৩%।[১২] আস-শুয়ায়দা প্রদেশে দ্রুজদের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি; এই প্রদেশের ছোট ছোট সব শহর, গ্রামকে বলা হয় জাবাল আল-দ্রুজ (দ্রুজদের পাহাড়)। এছাড়া কুনেত্রা প্রদেশ, ইদলিব প্রদেশ ও রিফ দিমাস্ক প্রদেশে অল্পসংখ্যক দ্রুজরা বসবাস করে।[১২]

খ্রিস্ট ধর্ম[সম্পাদনা]

হামায় অবস্থিত একটি চার্চ

২০১০ সালের আগে সিরিয়ায় খ্রিস্ট ধর্মালম্বীদের সংখ্যা ছিল মোট জনসংখ্যার ১১.৮%।[৭][৮] ১৯২০ সালে সিরিয়ায় খ্রিস্ট ধর্মালম্বীদের সংখ্যা ছিল ২৫ লক্ষ, যা মোট জনসংখ্যার ২০%। প্রায় বেশিরভাগ সিরীয় খ্রিস্টানরা দেশান্তরিত হওয়ায় তাদের সংখ্যা অনেক কমে গেছে। মুসলিমদের থেকে খ্রিস্টানদের দেশান্তরিত হওয়ার পরিমাণ অনেক বেশি এবং তাদের জন্মবৃদ্ধি হারও কম।

ইহুদী[সম্পাদনা]

১৯৯৭ সালে সিরিয়াতে ইহুদীদের সংখ্যা ৩০০০ থেকে কম ছিল। ১৯৯২ সালে, বেশিরভাগ ইহুহিরা দেশান্তরিত হয়। ফলে সিরিয়াতে বর্তমান ইহুদীর সংখ্যা ২০০-এরও কম। সিরীয় ইহুদীরা আরবিতে কথা বলে। ইহুদীদের প্রার্থনার স্থান অর্থাৎ সিনাগগ, সিরীয় সরকার দ্বারা বিশেষভাবে রক্ষিত।

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Syria"www.cia.gov। সংগ্রহের তারিখ ২৮ জানুয়ারি ২০২০ 
  2. "Middle East Public Opinion Survey (Syria 2017)" (পিডিএফ)। CMEPS-J Report No. 8। 
  3. Khalifa, Mustafa (২০১৩), The impossible partition of Syria, Arab Reform Initiative 
  4. Pierre, Beckouche (২০১৭), "The Country Reports: Syria", Europe’s Mediterranean Neighbourhood, Edward Elgar Publishing, পৃষ্ঠা 178, আইএসবিএন 1786431491, Before 2011, Syria's population was 74% Sunni Muslim, including 500,000 Palestinians and non-Arab populations, that is Kurds (9-10%) and Turkmen (4%). Other Muslims, including Shias and Alawites (11% of the Syrian population)...Various Christian denominations made up 10%. There were a few Jewish communities in Aleppo and Damascus as well as 1500 people of Greek descent and small Armenians populations. 
  5. Drysdale, Alasdair; Hinnebusch, Raymond A. (১৯৯১), Syria and the Middle East Peace Process, Council on Foreign Relations, পৃষ্ঠা 222, আইএসবিএন 0876091052, roughly 85 percent of all Syrians are Arabic-speaking and some 70 percent are Sunni Muslim, but these categories are not completely congruent and Arabic-speaking Sunni Muslims account for less than 60 percent of the total population. The religious and ethnic minorities that comprise 40 percent of Syria's population are diverse. Although 85 percent of all Syrians are Muslim and almost all the rest are Christian, both communities are subdivided into many sects. Among the former, the main minorities are the Alawis (11.5 percent), Druzes (3 percent) and Isma'ilis (1.5 percent), all of whom are Arabic-speaking splinter Shiite groups. The largely Arab Christians are divided among a large number of denominations, with the Greek Orthodox the largest (4.7 percent). The main ethnic minorities, among whom Arabic is now widley used, are the Kurds (8.5 percent), Armenians (4 percent), Turcomans (3 percent), and Circassians (under 1 percent). Of these, all but the Christian Armenians are Sunni Muslim. 
  6. Van Dam, Nikolaos (১৯৭৯), The Struggle for Power in Syria, Taylor & Francis, পৃষ্ঠা 1, আইএসবিএন 9780856647031 
  7. "Syria 2010 Public Opinion Survey" (পিডিএফ)publicpolicy.pepperdine.edu। ৮ আগস্ট ২০১৭ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ নভেম্বর ২০১৮ 
  8. "Syria – International Religious Freedom Report 2006"। U.S. Department of State। ২০০৬। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৬-২৮ 
  9. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; Khalifa 2013 loc=6 নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  10. https://mobil.derstandard.at/2000076385176/Angriff-auf-Afrin-Vertreibung-vom-Berg-der-Kurden
  11. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ২৭ অক্টোবর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ নভেম্বর ২০১৮ 
  12. Khalifa 2013, 6-7.

আরও পড়ুন[সম্পাদনা]

  • Marcel Stüssi MODELS OF RELIGIOUS FREEDOM: Switzerland, the United States, and Syria by Analytical, Methodological, and Eclectic Representation, 375 ff. (Lit 2012).

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]